রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali
Read More>>জিহ্বায় ঘা হলে কি করনীয়
রক্তদান করে মানুষের জীবন বাঁচানোর মত মহৎ কাজ আর হতেই পারে না। রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকারী। রক্ত দান করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের মধ্যে নতুন করে রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। এবং দুই সপ্তাহের ভিতরে নতুন রক্তকণিকা তৈরি হয়ে শরীরে ঘাটতি পূরণ করে। বছরে তিনবার রক্তদান আমাদের শরীরের লোহিত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে ও নতুন রক্ত কণিকা তৈরীর হার বৃদ্ধি করে।
রক্তদানের উপকারিতাঃ-
রক্তদানে কোন ক্ষতিকর দিক নেই। নিয়ম মেনে এবং সঠিক মাত্রায় রক্ত দান করলে শরীরের অনেক উপকার হয়। রক্তদান মহৎ একটি উদ্যোগ। রক্তদানের মাধ্যমে যেমন একটি মানুষের জীবন বাঁচানো যায় ঠিক তেমনি ভাবে রক্ত দান করলে নিজের শরীরের অনেক উপকার হয়। অনেকেই আমরা ভেবে থাকি যে রক্তদান করলে শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগতে হবে কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ রক্তদানের অনেক উপকারিতা রয়েছে পৃথিবীর সবথেকে নিঃস্বার্থ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উপকার হল রক্তদান। বিশেষজ্ঞদের মতে এক ব্যাগ রক্ত দিতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট চাইলেই এই অল্প সময়ের মধ্যে একজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। রক্তদাতা কে অবশ্যই ভাইরাসজনিত রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং চর্মরোগ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
১) নিয়মিত রক্তদানকারীর হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি একেবারেই কম হয়।
২) নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে বিনা খরচে জানা যায় নিজের শরীরে বড় কোন রোগ আছে কিনা। যেমনঃ হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, সিফিলিস এইচ আই ভি ( এইডস) ইত্যাদি।
৩) ইংল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীর জটিল অথবা দুরারোগ্য রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকেন অনেক অংশে। নিয়মিত রক্তদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
৪) রক্তে কোলেস্টেরলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে নিয়মিত রক্তদান।
৫) মুমূর্ষ মানুষকে রক্তদান করে আমরা মানসিক তৃপ্তি পেয়ে থাকি। কারণ এত বড় দান আর কোনভাবেই সম্ভব নয়।
৬) ধর্মীয় দিক থেকেও রক্তদান অত্যন্ত পূর্ণের কাজ। একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সমগ্র মানবজাতির জীবন বাঁচানোর মত মহান কাজ।রক্তদানের মতশ্রেষ্ঠ ইবাদাত আর কি হতে পারে।
৭)রক্তদান কেন্দ্রে গেলে খুব সহজেই আমরা শরীরের কিছু পরীক্ষা করে নিতে পারি এবং সেগুলো বিনামূল্যে যেমনঃ এইচআইভি /এইডস, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস। তাছাড়া রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা যায়।
৮)রক্তদান করলে লিভার এবং হার্টের জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তার মানে এটাই দাঁড়াচ্ছে রক্তদানের মাধ্যমে আমি অন্য একজনকে বাঁচাতে পারি এবং নিজেও সুস্থভাবে বাঁচতে পারি।
৯)শরীরে যদি অতিরিক্ত আয়রন জমে যায়। যেটাকে বলা হয়ে থাকে হিমো ক্রমাটাইটিস যা আমাদের শরীরে ক্ষতি করে থাকে অথবা একটি রোগ। নিয়মিত রক্তদানের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অতএব রক্তদান আমাদের শরীরে সুফল আনে ।
১০)যাদের শরীর খুব বেশি মোটা এবং ওজন কমে না তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তদানের মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব এবং মোটা থেকে চিকন হওয়া সম্ভব। নিয়মিত রক্তদান শরীরের কোন ক্ষতি করে না।
১১) রক্ত দানের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর দিক অথবা ভালো দিক হচ্ছে মানসিক তৃপ্তি। নিজের মনের ভিতরে এমন একটি অনুভূতি আসে যে আমি মানুষকে রক্ত দিয়েছি এবং সে বেঁচে আছে। আমার রক্তদানের মাধ্যমে সে সুস্থভাবে তার পরিবারের সাথে পৃথিবীতে বেঁচে আছে। আমার রক্ত নিয়ে সে পৃথিবীতে বেঁচে আছে এটি ভাবতেই নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হয় এবং মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়
মূলত কারা রক্ত দিতে পারবেনঃ-
১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ লোকেরা রক্ত দিতে পারবেন। রক্তদানের ক্ষেত্রে পুরুষের ওজন ৫৫ কেজির বেশি হতে হবে। এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৫০ কেজির বেশি ওজন থাকতে হবে। যদিও শারীরিক ওজন কিন্তু আবার উচ্চতার উপর নির্ভর করে থাকে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>মুখের বিচি কমানোর উপায়
রক্তদানের আগে করণীয়ঃ-
রক্তদানের আগে রক্ত দাতা কে শারীরিক কিছু পরীক্ষা করে নিতে হবে ।রক্তদাতা শরীরে বড় কোন রোগ আছে কিনা যেমনঃ
১) রক্তদাতার হার্টের সমস্যা আছে কিনা দেখে নিতে হবে।
২) রক্তদাতার উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে।
৩) রক্ত দাতা শরীরে কিডনির সমস্যা আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
৪)রক্তদানের আগে স্লাইন পানি খেতে হবে।
৫) রক্তদানের আগে রক্তদাতা কে জ্বর মেপে নিতে হবে।
৬) রক্তদানের আগে রক্ত দাতার শরীরের পালস ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে।
৭) রক্তদানের আগে রক্ত দাতা এইডস আক্রান্ত কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
৮) রক্ত দানের আগে দেখতে হবে রক্তদাতার শরীরে হাই ব্লাড সুগার আছে কিনা।
৯)রক্তদানের পূর্বে দেখতে হবে রক্তদাতা শরীরে এলার্জিজনিত সমস্যা আছে কিনা।
১০)রক্তদানকারী ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত কিনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
১১) রক্তদানকারী ডেঙ্গু আক্রান্ত কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
১২) রক্তদানকারী করোনা আক্রান্ত কিনা পরীক্ষা করে জেনে নিতে হবে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>চোখের নিচের কালো দাগ সারানোর উপায়
রক্তদানের পূর্বে রক্তদানকারীকে অবশ্যই মেডিকেল টেস্ট করে নেওয়া উচিত কারণ রক্তদাতার শরীরে এই ধরনের রোগ থাকলে। রক্ত গ্রহণকারীর শরীরে খুব সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। তাই রক্ত গ্রহণের পূর্বে তাড়াহুড়া না করে অবশ্যই আমরা ভালোভাবে সবগুলো মেডিকেল পরীক্ষা করে তারপর রক্ত গ্রহণ করব এবং রক্ত দান করব ।
রক্তদানের পরে করণীয়ঃ-
১)রক্তদানের পরে রক্তদানকারী কিছুক্ষণ শুয়ে থাকবো।
২) রক্তদানের পরে স্যালাইন পানি খেয়ে নিব।
৩) রক্তদানের পরে ডাবের পানি খেয়ে নেব।
৪) রক্তদানের দুই সপ্তাহের ভিতরে রক্তদাতা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>ভ্রু ঘন করার উপায়
রক্ত কাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা যাবেঃ-
আমরা সকলেই কমবেশি জানি রক্ত নিকট আত্মীয়র কাছ থেকে নেওয়া ভালো। যেমনঃ বাবা-মা, ভাই-বোন এবং আত্মীয় রক্ত নেওয়া ভালো। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। নিকট আত্মীয়র কাছ থেকে রক্ত নেওয়া ভালোর তো কোন প্রশ্নই আসে না বরং আত্মীয়ের কাছ থেকে রক্ত নেওয়া একপ্রকার অপরাধ। সব থেকে ভালো হয় দূরের কোনো আত্মীয় থেকে রক্ত নেওয়া যেমনঃ বন্ধু , বান্ধব ও দূরের কারো কাছ থেকে নেওয়া।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>হাঁটু ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
রক্তশূন্যতা হলেই কি রক্ত নেওয়া উচিতঃ-
রক্তশূন্যতার কারন নির্ণয় না করে রক্ত দেওয়া উচিত নয়। কারণ এতে করে রোগীর রক্তশূন্যতার কারণ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। তাছাড়া রক্তদানের ফলে মূলত যে রোগের কারণে রক্তশূন্যতা হয়েছে সে রোগ বারার সম্ভাবনা থাকে বেশি। পরবর্তীতে সেই রোগের চিকিৎসা করানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় ক্যান্সারের মত রোগ ছড়িয়ে যায়। তাছাড়া রক্তশূন্যতার কারণ নির্ণয় করে ঠিকভাবে ঔষধ খেলে খুব দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। তাই অবশ্যই রক্তশূন্যতার ক্ষেত্রে কারন নির্ণয় করা খুবই জরুরী ডক্টরের পরামর্শ ছাড়া রক্ত নেওয়া উচিত নয়।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>চোখ উঠলে করণীয়
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে রক্ত দেওয়া যাবে কি?
যদি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে তাহলে দেওয়া যাবে। এ রোগের কারণে শরীরের অন্য কোন অঙ্গের সমস্যা যেমনঃ উচ্চ রক্তচাপ থেকে হার্টের সমস্যা এবং ডায়াবেটিস থেকে কিডনির সমস্যা হলে রক্ত দেওয়া যাবে না।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা
রক্তদানের ফলে শরীরে রক্তের কোন ঘাটতি হয় কি?
একজন ব্যক্তি এক ব্যাগ রক্ত দিতে পারে। এক ব্যাগ রক্তের ঘাটতি খুব দ্রুত শরীরে পূরণ হয়ে যায় এবং এতে কোন ক্ষতি নেই। প্রত্যেক ব্যক্তির রক্ত চার মাস পর আর কোন কাজে লাগে না তাই সুস্থ ব্যক্তি প্রতি তিন থেকে চার মাস পর এক ব্যাগ করে রক্ত দান করতে পারে এতে শারীরিক কোন ক্ষতি হয় না।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>মুখের তৈলাক্ততা দূর করার উপায়
রক্ত নেওয়ার কারণে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ঃ-
অনেক সময় গ্রুপিং এবং ক্রস মেচিং করার পর রক্ত নেওয়ার কারণে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। গ্রুপিং এবং ক্রস ম্যাচিং ছাড়াও মানুষের শরীরের রক্তে ভিন্ন ভিন্ন আরো অনেক উপাদান থাকে । অনেক সময় দেখা যায় রক্তদানকারী এবং গ্রহণকারীর রক্ত গ্রুপিং এবং ক্রস ম্যাচিং ছাড়াও ভিন্ন যে উপাদান গুলি আছে দুজনার শরীরের একরকম থাকে না যার ফলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
রক্ত নেওয়ার আগে সাধারণত রক্তের গ্রুপ এবং আরএস টাইপিং দেখা হয় কিন্তু এর বাইরেও রক্তের গ্রুপের মধ্যে আরো অনেক গ্রুপ এবং সাপ গ্রুপ থাকে। ফলে গ্রুপিং এবং ক্রস ম্যাচিং করার পরেও মানুষের শরীরে রক্তে নেওয়ার পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাছাড়া কিছু রোগের কারণেও অনেক সময় রক্ত নিলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>চোখের লাল কমানোর ঘরোয়া উপায়
রক্ত দেওয়ার পর যা হয়ঃ-
রক্ত দেওয়ার পরে কিছুটা মাথা ঘুরতে পারে এবং শরীর একটু দুর্বল রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সময় হাটাহাটি না করে অন্তত এক থেকে দুই ঘন্টা বিশ্রাম নেওয়া উচিত। রক্তদাতা যদি ঘামতে থাকে। এবং অস্থির হতে থাকে তবে তাকে স্যালাইন খাওয়াতে হয়। সাধারণত সুস্থ মানুষ প্রতিবার এক ব্যাগ করে রক্ত দিতে পারে এতে কোন শারীরিক সমস্যা হয় না। রক্ত দেওয়ার পর লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে প্রায় একমাস সময় লাগতে পারে।পাশাপাশি রক্ত বাড়ে এমন খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>চোখের পাপড়ি ঘন করার উপায়
নিয়মিত রক্তদানের মাধ্যমে আমরা যেভাবে উপকৃত হইঃ-
নিয়মিত রক্তদানের মাধ্যমে আমাদের শরীর বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। যেমনঃ
১) রক্তদান করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
২) বছরে তিনবার রক্ত দিলে শরীরে নতুন লোহিতকণিকা সৃষ্টি হয়।
৩)রক্তদান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪) নিয়মিত রক্তদানের ফলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাক্টের ঝুঁকি কমায়।
৫) নিয়মিত রক্তদানের ফলে রক্তদাতা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৬) রক্তদানে কোন সমস্যা হয় না কারণ মানুষের শরীরে রক্তকণিকা গুলো তিন মাস পর পর নষ্ট হয়ে যায় এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরি হয়। অতএব রক্তদান করা আমাদের শরীরের জন্য উপকার।
৭) রক্তের মূল উপাদান হলো পানি। তাই রক্ত দান করার ২৪ ঘন্টার ভিতরে পূরণ হয়ে যায় ।
৮) বছরে তিনবার রক্তদান নতুন রক্ত কণিকা তৈরীর হার বৃদ্ধি করে।
৯) মানুষের শরীরে অতিরিক্ত আইরনের ফলে যে রোগ হয়ে থাকে নিয়মিত রক্তদানের কারণে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১০) মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত দিলে এবং প্রাণ বাঁচালে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়। নিজেকে অনেক গর্বিত মনে হয়।
যে খাবারগুলো খেলে রক্ত ও রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি পায়ঃ-
দেহের সকল অংশে অক্সিজেন এবং সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান বয়ে নিয়ে যায় রক্ত। দেহে রক্তের কোন উপাদান কম থাকলে সুস্থভাবে বাঁচা সম্ভব নয়। রক্তে আছে লাল রক্ত কণিকা, সাদা রক্ত কণিকা এবং প্লেটলেট। লাল রক্ত কণিকায় আছে বিশেষ ধরনের আয়রন এবং হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিনের প্রধান কাজ হল হৃদপিন্ড থেকেদেহের সকল অঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ করে । হিমোগ্লোবেন দেহকোষ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ও সরবরাহ করে। এবং তা পুনরায় ফুসফুসের কাছে পৌঁছে দেয় এবং তার নিঃশ্বাসের সঙ্গে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। সুতরাং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে শরীর অক্সিজেনের অভাবে দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে রক্তশূন্যতার মতো রোগ হতে পারে। আর এ থেকে বাঁচার উপায় হল হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ানোর কিছু খাবার খাওয়া। যেমনঃ
ডার্ক চকলেটঃ-শিশুদের প্রিয় খাবার ডার্ক চকলেটে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। ডাক্তাররাও রক্ত দেয়ার পর ডার্ক চকলেটে খাওয়ার জন্য বলে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>নাক বন্ধ হলে করনীয়
মাংসঃ-রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দ্রুত বাড়াতে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। যেগুলো থাকে প্রাণীর লাল মাংস যেমনঃ গরুর মাংস, খাসির মাংস, মহিষের মাংস এবং কলিজা আয়রনের সবচেয়ে ভালো উৎসগুলোর মধ্যে একটি। আয়রন হিমোগ্লোবিনের জন্য খুবই জরুরী। মুরগির মাংস লাল না হলেও কিন্তু তাও শরীরে প্রোটিনের কাজ করে এবং দেহকে বিশাল পরিমাণে আয়রন সরবরাহ করতে পারে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায়
ফলঃ-সকল ধরনের রসালো ফল যেমনঃ আম, লেবু এবং কমলা ভিটামিন সি এর সবচেয়ে ভালো উৎস। আর দেহে আয়রন দ্রুত শুষে নেওয়ার জন্য ভিটামিন সি খুব ভালো কাজ করে যার ফলে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে গতি বাড়ে। স্ট্রবেরি, আপেল, তরমুজ, পেয়ারা এবং বেদানাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
Read More>>দ্রুত ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
সামুদ্রিক মাছঃ-সামুদ্রিক মাছের প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ পুষ্টি উপাদান আছে। সুতরাং রক্তশূন্যতা রোগীদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন সামুদ্রিক মাছ রাখা প্রয়োজন।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
শস্য জাতীয় খাদ্যঃ-চাল, গম, বার্লি এবং ওটস রক্তশূন্যতা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে খুব ভালো আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবারের প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। লাল চাল বিশেষ করে সবার জন্য ভালো।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
শাক ,সবজিঃ-প্রতিদিন তাজা সবজি খেলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন , আয়রন এবং খনিজ পুষ্টি ঘাটতি মিটবে। আলু, ব্রকলি , টমেটো এবং কুমড়ো আয়রনের ঘাটতি মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাল শাক খেলে শরীরের দ্রুত হিমোগ্লোবিন বাড়ে। তাছাড়া আমরা সকলেই জানি শাকসবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন তাই প্রতিনিয়ত আমাদের শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
ডিমঃ-ডিম আমাদের একটি জনপ্রিয় খাদ্য। ডিমে আছে উচ্চমাত্রায় আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। ডিমের হলুদ কুসুমে আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পুষ্টি এবং ভিটামিন যা আমাদের লোহিত কণিকাকে বৃদ্ধি করে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়। ডিমের সাদা অংশে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন । তাই যাদের শরীর একটু দুর্বল হয় তাদেরকে প্রতিদিন ডিম খেতে বলা হয়।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
শুকনো ফলঃ-খেজুর, কিসমিস এবং বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন এবং আস এসব খাবার খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় ।শুকনো খেজুর আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
বাদামঃ-যেকোনো ধরনের বাদাম মানবদেহে উপকারী বলে গণ্য করা হয়। যার ফলে তরুণদেরকে বেশি করে বাদাম খেতে বলা হয় কারণ বাদাম শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান।
চিনা বাদাম, কাঠবাদাম , পেস্তা বাদাম এবং কাজুবাদাম যেকোনো ধরনের বাদামেই আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং আয়রনের ঘাটতি মিটিয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় খুব দ্রুত গতিতে।
রক্ত দেয়ার পর কি খাওয়া উচিত/What To Do After Blood Donation In Bengali |
0 মন্তব্যসমূহ