বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

জ্বর কিঃ-

সাধারণত আমরা জ্বর বলতে বুঝি শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।এটি সব বয়সীলোকের হয়ে থাকে।তবে বড়দের তুলনায় ছোট সোনামণিদের বেশি হয়ে  থাকে। সাধারণত মানুষের শরীরের তাপমাত্রা একেক সময় একেক ধরনের থাকে। যেমন; সকালবেলা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা শীতল অবস্থায় থাকে । এবং দুপুর বেলা বেশি থাকে রাতে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। এছাড়া আমরা কি পোশাক পরিধান করেছি এরপরও তাপমাত্রা নির্ভর করে। মোটা অথবা ভারী পোশাক পরিধান করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে  যায়। এর পাশাপাশি পাতলা কাপড় পরিধান করলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা শীতল হয়ে যায় অথবা কমে যায়। 

মানুষের শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে 98.6°যখন এরচেয়ে বেশি পয়েন্ট হয়ে যায় তখন আমরা জ্বর বলে গণ্য করি। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে  শারীরিক তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে। 

জ্বরের লক্ষণঃ- 

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

বাচ্চাদের শরীরে যখন জ্বর আসে তখন শরীর-গরম-হয়ে-যায়। চোখ লাল হয়ে যায় শরীর ঠান্ডা লাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামতে থাকে। গলা শুকিয়ে যায় এবং পানির পিপাসা লাগে। অনেক সময় দেখা যায় অন্য কোন রোগের আগে শরীরের জ্বর আসে যেমন ; কান ব্যথা, গলা ব্যথা সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।  
অনেক সময় দেখা যায় শিশুরা এগুলো লক্ষণ বুঝতে পারেনা তাই আমরা যখন বাচ্চাদের শরীরে অধিক তাপমাত্রা দেখি এবং চোখ লাল হয়ে যায় অধিক মাত্রায় ঘামে তখন বুঝতে পারি আমাদের শিশুটি অসুস্থ এরকম অবস্থা দেখা দিলে অবশ্যই শিশুটির ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া শিশুকে কোন ঔষধ সেবন করানো যাবে না। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য আমরা ঘরোয়া কিছু টিপস অবলম্বন করতে  পারি। 

জ্বর হলে কি করবেনঃ-

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

Read More>>কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

বাচ্চাদের শরীরের জ্বর হলে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন দেখা দিতে পারে যেমন কানে  ইনফেকশন, গলায় ইনফেকশন, ইউরিন ইনফেকশন ইত্যাদি। তবে বাচ্চাদের শরীরে জ্বর হলে আমাদের যেটা করতে হবে সেটি হল শিশুর শরীরে অধিকমাত্রা থাকলে কুসুম গরম পানি দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে তাপমাত্রা না কমা পর্যন্ত। তরল খাবার দিতে হবে। যেমনঃ ফলের জুস, লেবুর শরবত ইত্যাদি। তবে মনে রাখতে হবে অবশ্যই যেন আমরা শিশুর জ্বর হলে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি বেশি পরিমাণে দিব। শিশুদের শরীরে জ্বর হলে অবশ্যই পিতা-মাতাকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে  বড় ধরনের কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়। দুই থেকে তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এর খেয়াল রাখতে হবে। আমরা শিশুদের জন্য নাপা সিরাপ ব্যবহার করতে পারি এবং বাসায় সাপোজিটর রাখতে  পারি। আমরা জ্বর কমানোর জন্য একটা পাত্রে পানি নিয়ে  এবং একটি কাপড়ের টুকরা ভিজিয়ে ভালোভাবে চেপে পানি ঝরিয়ে নিয়ে শিশুর কপালে জলপট্টি দিতে পারি । যার ফলে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাবে। যে শিশুটি নাপা সিরাপ খেতে চায় না তার ক্ষেত্রে জ্বর কমানোর জন্য সাপোজিটর ব্যবহার করতে পারি। তবে সবকিছুই যেন হয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। 

শিশুর ঠান্ডা জনিত জ্বর হলে করণীয়ঃ-

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

শিশুর ঠান্ডা জনিত জ্বর হলে আমরা অবশ্যই শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য শরীর মুছিয়ে দেবো। কুসুম গরম পানি দিয়ে একটি ছোট গামছা অথবা কাপড় ভিজিয়ে সমস্ত শরীর মুছিয়ে দেবো এবং হালকা করে ফ্যান ছেড়ে দিব। পরবর্তীতে আমরা কুসুম গরম পানিতে কাপড়ের টুকরা ভিজিয়ে জলপট্টি দেবো। লিকুইড খাবারের ব্যবস্থা করব। ঠান্ডা জনিত জ্বর হলে আমরা তুলসী পাতার রস। মধু  এবং কালিজিরার তেল। আমরা কুসুম গরম পানিতে একটু মধু একটু লেবুর রস এবং একটু তুলসী পাতার রস একসাথে মিশিয়ে শিশুকে সেবন করালে অবশ্যই ঠান্ডা জনিত জ্বর সেরে যাবে।


খিঁচুনি হলে যা করবঃ-

    
বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুর বয়স যখন এক বছর থেকে সাত বছরের ভিতর থাকে তখন শিশু শরীরে জ্বরের তাপমাত্রা যখন বেশি বেড়ে যায় তখন খিঁচুনি হয়ে থাকে এটি বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর একটি লক্ষণ। 
এরকম হলে অবশ্যই শিশুকে নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে ।বাড়িতে বসে সময় নষ্ট করা যাবে না। খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে  হবে। 


শিশুর জ্বর হলে মায়ের করনীয়ঃ-

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

Read More>>ভ্রু ঘন করার উপায়

শিশু অসুস্থ হলে অথবা জ্বর হলে বাবার চেয়ে মাকেই বেশি কাছে থাকতে হয়। যার ফলে মায়ের কিছু করনীয় বিষয় আছে যেমনঃ

১) শিশুর গায়ের তাপমাত্রা বাড়ছে কিনা।

২)  শিশুর জিভে ঘা আসছে কিনা।

৩) শিশুর শরীরে লালচে কোন ধরনের ঘামাচির মত দেখা যায় কিনা। 

৪)শিশুটি স্বাভাবিক আচরণ করছে কিনা।

৫)  শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে কিনা।

৬)শিশুটির জীব শুকিয়ে গেছে কিনা। জিপ শুকিয়ে গেলে বুঝতে হবে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। তাকে অবশ্যই কিছু তরল খাবার দিতে হবে। 

৭)  শিশুটি চুপচাপ শুয়ে আছে কিনা।

৮)শিশুটির টাইফয়েড নিউমোনিয়া হয়েছে কিনা। 

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

বাচ্চাদের জ্বরের পাশাপাশি শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেমনঃ বাচ্চাদের হাত পা ফুলে উঠেছে কিনা। প্রসাব পায়খানা ঠিকমত হচ্ছে কিনা। প্রসাব কমে গেছে কিনা কত ঘন্টা পরে প্রস্রাব করে সেটা অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। পায়খানার সাথে রক্ত যায় কিনা খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চাদের নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে বুকের নিচের অংশ  ওঠানামা করে কিনা এবং বুকের নিচের অংশ দেবে যায় কিনা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। 

বাচ্চাদের জ্বরের পাশাপাশি  বমির পরিমাণ বেশি হচ্ছে কিনা। বমির পরিমাণ বেশি হলে বাচ্চারা দুর্বল হয়ে যায়।বাচ্চাদের জ্বরের পাশাপাশি খিঁচুনি হচ্ছে কিনা এবং মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে কিনা অথবা দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বেরোচ্ছে না। জ্বরের পাশাপাশি বাচ্চাদের শরীরে এসব উপসর্গগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাদের চিকিৎসা করাতে হবে এমনকি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাচ্চার  শারীরিক কন্ডিশনের উপরে। অনেক সময় জ্বর এর পাশাপাশি বাচ্চাদের শরীরে এলার্জি সমস্যা গুলো দেখা যায়। এলার্জির কারণে জ্বরের সাথে সাথে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। 

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়ঃ-

তুলসিপাতার রস,মধু ও পানিঃ-৩ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের ঠাণ্ডাজনিত জ্বরের ক্ষেত্রে তুলসিপাতার রস ও মধু সামান্য পরিমান কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে তাদের খাওয়াতে হবে। এতেকরে বাচ্চাদের জ্বর দ্রুত কমানো যাবে।  

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

Read More>>শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

চাঃ-আবার ৩ বছরের বড় বাচ্চাদের চাইলে লবঙ্গ,আদা তেজপাতা দিয়ে চা খেতে দেওয়া যেতে পারে এতে তারা কিছুটা আরাম পাবে।

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio

Read More>>মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়


লেবুঃ- আমরা চাইলে লেবুর রস কুসুম গরম পানি অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে পারি। যেহেতু লেবুতে ভিটামিন সি থাকে তাই এটি বাচ্চাদের শরীরের  জন্য উপকারী। গরম গরম লেবু চা খাওয়ালে খুব দ্রুতই জ্বর কমে যাবে।

বাচ্চাদের দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়/ Bacchader Jor Hole Koronio 


Read More>>খুব তাড়াতাড়ি চিকন হওয়ার উপায়

বাচ্চাদের শরীরের এসব উপসর্গ গুলো মাকে খেয়াল রাখতে হয় এবং যখনই আমরা শিশুদের মাঝে এই উপসর্গগুলো দেখতে পাবো। তখন আমরা সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব। শিশুটি যখন চুপচাপ শুয়ে থাকবে তখন বুঝতে হবে শিশুটি অনেক দুর্বল হয়ে গেছে।তখন সেই বাচ্চাটির বেশি করে যত্ন নিতে হবে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ